নিজস্ব প্রতিবেদক : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী (পিইসি) পরীক্ষা দেওয়ার তীব্র আকাংখা নিয়ে কেন্দ্রের গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকা সেই প্রতিবন্ধী মাহিবুলের পড়ালেখার সার্বিক দায়িত্ব নিলেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মাহিবুলের বাবার সাথে মুঠোফোনে কথা বলে তার পড়ালেখার সার্বিক দায়িত্ব নেয়ার কথা জানান এমপি বকুল।
সংসদ সদস্য বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি মাহিবুলের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহের বিষয়টি। সত্যিই খুব লেগেছে ওর আগ্রহ দেখে। এজন্য মাহিবুলের স্বপ্ন ও ইচ্ছেটাকে বাস্তবে রুপদানের চেষ্টায় ওর বাবার সাথে মুঠোফোনে কথা বলেছি। একজন প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ালেখা করার প্রবল আগ্রহ রয়েছে তার এজন্য তার বাবা-মাকে বলেছি, আপনাদের সন্তানকে বোঝা মনে না করে পড়ালেখায় উৎসাহিত করবেন, ওর লেখাপড়ার সকল দায়িত্ব আমি নেবো।
স্থানীয় সাংসদের এ উদ্যোগ ও আশ্বাস পেয়ে সাংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মাহিবুলের পরিবার।
গত রোববার প্রথম দিনে পরীক্ষা দেওয়ার বাসনায় পুরো আড়াই ঘন্টা গেটে দাঁড়িয়ে ছিল মাহিবুল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি নজরে এলে সোমবার সকালে আবারও মাহিবুলকে গেটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সমাজসেবা অফিসার রেজাউল করিম।
বিষয়টি নিয়ে ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের সাথে আলোচনা করেন। পরে মাহিবুলকে ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে পরীক্ষার আদলে এক ছায়া পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেই পরীক্ষা গ্রহন করা হবে শুধুই শিশু মনের মাহিবুলকে সান্তনা দেওয়ার জন্য। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিফলন হিসেবে কোন নিয়মিত পরীক্ষার কেন্দ্রে নয়, পার্শ্ববর্তী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন স্মৃতি বাক, শ্রবণ ও অটিস্টিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে পরিক্ষায় অংশ নিচ্ছেন শিশুটি।
মাহিবুলের বাবা কামরুল আহসান খান জানান, পরিক্ষার শুরুর দিন থেকে পরীক্ষা দেওয়ার জিদ ধরেছিল মাহিবুল। তাই উপায় না দেখে তাকে নিয়ে এসেছিলেন পিইসি পরীক্ষার কেন্দ্রে। স্কুল ড্রেস পরে পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের গেটে পুরো পরিক্ষার আড়াই ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এটা দেখে ইউএনও তাকে পরিক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়ায় মাহিবুল খুব খুঁশি।
উল্লেখ্য, উপজেলার নওশেরা মহল্লার শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধী মাহিবুল ডঃ এমদাদ খান ও ছেতেরা খান অর্কা কৃষি ও কারিগরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। পরীক্ষা দেওয়ার শারিরীক ও মানসিক সক্ষমতা নেই ভেবে বাবা-মা এ বছর পরীক্ষার জন্য ডিআর ভুক্ত না করায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি সে।