রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীতে এটিএন নিউজের রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম সংবাদ সংগ্রহের সময় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডি) কর্মচারিরা তাঁদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
এ ঘটনায় সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিএমডিএর দুই জন কর্মচারী ভান্ডার রক্ষক মো. জীবন ও গাড়ি চালক আব্দুস সবুরকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অফিস পরিচালনায় এসেছে নতুন নিয়ম। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় নগরের আমবাগান এলাকায় বিএমডিএর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসছেন কি না, সে সম্পর্কে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদ তাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোপের মুখে পড়ে কিছুক্ষন পর বুলবুল হাবিব লাইভ সম্প্রচার শুরু করে।
এক পর্যায়ে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদের নির্দেশে কয়েকজন তাদের মারধর শুরু করেন। ভাঙচুর করেন এটিএন নিউজ-এর ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন। আহত হন বুলবুল হাবীব ও রুবেল ইসলাম। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
রুবেল ইসলামের কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ভুক্তভোগী বুলবুল হাবিব জানান, ‘সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ৮টায় অফিস শুরু হওয়ার কথা। সেই নির্দেশনা কতটুকু কার্যকর হয়েছে সেটি দেখতে বিএমডিএ যান তারা। সাড়ে ৮টায় নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বিএমডিএ তে প্রবেশ করেন। এর পরপরই তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। বিনা অনুমতিতে কেন প্রবেশ করেছে এবং কেন ছবি তুলছে এই নিয়ে বিতর্ক হয়।’
‘এরপর তার নির্দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহন হন ক্যামেরাম্যান রুবেল। রুবেল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
খবর পেয়ে জেলার সাংবাদিক সমাজ সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ জানান বিএমডিএ’র কার্যালয়ের সামনে। তারা দোষী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহিস্কারের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট করেন। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ দুজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলীর কথা জানালেও সাংবাদিক সমাজ তা মেনে নেননি।
সবশেষে বিএমডিএর চেয়ারম্যান আক্তার জাহান বলেন, আমরা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে ভিডিও ফুটেজ দেখে দুই সাংবাদিকের উপর হামলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এর পর দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্তে কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ সঙ্গে আরও কারা জড়িত তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান আক্তার জাহান।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, প্রাথমিকভাবে সাংবাদিকরা দুইজনের বরখাস্তের দাবি করেছিলেন। সে দাবি পূরন হয়েছে বলেন জানান। আরও পাঁচজনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানিয়েছেন। অভিযুক্তদের পরেরদিনের মধ্যে বদলির দাবি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের আশ্বাস দিয়েছেন। এর পর সাংবাদিকদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়।